Header Ads

বাজে ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশের



ইকবাল হোসেন ইমন যখন রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের তখনও প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। পর্যাপ্ত ওভার থাকলেও হাতে ছিল মাত্র এক উইকেট। বিশেষজ্ঞ কোনো ব্যাটার উইকেটে না থাকায় সমীকরণটা একেবারেই সহজ ছিল না। তবে মারুফ মৃধাকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ব্যাটিং সত্তাকে যেন জাগিয়ে তুললেন রোহানাত দোল্লাহ বর্ষণ। বল হাতে আগুন ঝড়ানো বর্ষণ ব্যাট হাতে করলেন ২১ রান। তবুও বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে নিয়ে যেতে পারলেন না বর্ষণ। মোহাম্মদ জিসানের বলে মারুফ বোল্ড হয়ে ফিরলে টাইগার যুবাদের হারতে হয় ৫ রানে। ফলে পাকিস্তানের কাছে হেরে যুব বিশ্বকাপে সুপার সিক্স থেকেই বিদায় নিলো বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই এলোমেলো ব্যাটিং করতে থাকে বাংলাদেশ। আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ের জন্য বেশি পরিচিত জিসান আলম। পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ লক্ষ্য তাড়ায়ও নিজের স্বভাবসূলভ ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করতে থাকেন তিনি। প্রথম ওভারে থেকেই পাকিস্তানের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া জিসান অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উবাইদ শাহর অফ স্টাম্পের বাইরের লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।


ফলে দারুণ শুরু করা জিসানকে ফিরতে হয় ১২ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি। উবাইদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জিসানের মতো খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ভালো শুরু করলেও সেটা ধরে রাখতে পারেননি চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। আলী রাজার বলে তিনিও সাদ বাগকে ক্যাচ দিয়েছেন। রিজওয়ান ২০ রান করে ফিরলে পঞ্চাশের আগেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আহরার আমিন ও আরিফুল ইসলাম। যদিও তাদের জুটি খুব বেশি বড় হতে দেননি উবাইদ। তরুণ এই পেসারের অনেকটা বাইরের বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন আহরার। তবে এজ হয়ে স্লিপে গেলে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন হারুন আরশাদ। বাঁহাতি এই ব্যাটারকে ফিরতে ২০ রানে। আহরার আউট হওয়ার পর ফিরেছেন আরিফুলও। দ্রুত উইকেট হারানোর পর শেষ দিকে বর্ষণ ও মারুফ ২৩ রানের জুটি গড়লেও জয় পাওয়া হয়নি। পাকিস্তানের হয়ে একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন উবাইদ।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার শ্যামল হোসেন ও শাহজাইব খান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে তাদের দুজনের ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন বর্ষণ। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা গুড লেংথ ডেলিভারি না খেলে ছেড়ে দিয়েছিলেন শ্যামল। অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যাবে এমন ভাবনা নিয়ে ছেড়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় ১৯ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারকে।

তিনে নামা আজান আওয়াইজকেও টিকতে দেননি বর্ষণ। ডানহাতি এই পেসারের বুক বরাবর বাউন্সারে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা আশিকুর রহমান শিবলির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ৬ রান করা আজান। বর্ষণের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে কভারে ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে চেয়েছিলেন শাহজাইব। বাঁহাতি এই ওপেনারের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন সাদ বাগ। তবে আরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে।

অনেকটা সময় উইকেটে টিকে থাকলেও শাহজাইবকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি জীবন। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন ২৬ রান করা শাহজাইব। আহমাদ হাসান ও হারন আরশাদ দ্রুতই ফিরলে দলের একশ রানের আগেই ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর জুটি গড়ে তোলেন আরাফাত মিনহাস এবং আলী আসফান্দ। তাদের ৪৩ রানের জুটি ভাঙেন জীবন।

ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে আহরার আমিনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৯ রান করা আসফান্দ। এরপর দ্রুতই সাজঘরে ফিরেছেন উবাইদ শাহ, মোহাম্মদ জিসান। শেষ ব্যাটার হিসেবে আরাফাত ৩৪ রান করে ফিরলে পাকিস্তান অল আউট হয় ১৫৫ রানে। বাংলাদেশের যুবাদের হয়ে চারটি করে উইকেট নিয়েছেন বর্ষণ এবং জীবন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ